মেশিনের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে হাতে ভাজা মুড়ির ঐতিহ্য

- আপডেট : ০৯:২০:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫
- / 51
সকালের নাশতায় কিংবা বিকেলের চায়ের আড্ডায় মুড়ির জনপ্রিয়তা বরাবরই তুঙ্গে। বাংলার ঘরে ঘরে এটি এক পরিচিত মুখরোচক খাবার, যা বছরের সব ঋতুতেই সমানভাবে জনপ্রিয়। বিশেষ করে রমজান মাস এলে মুড়ির চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। তবে সময়ের পরিবর্তনে মুড়ি ভাজার সনাতন পদ্ধতি এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে মেশিনে তৈরি মুড়ি বাজার দখল করায় বিপাকে পড়েছেন হাতে মুড়ি ভাজার কারিগররা। উৎপাদন বেড়েছে বটে, তবে সেই পুরোনো স্বাদ আর মিলছে কই?
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার পৌর শহরের একটি ওয়ার্ডের প্রবীণ বাসিন্দারা জানান, এক সময় প্রায় প্রতিটি পরিবার হাতে মুড়ি ভাজার কাজে যুক্ত ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সংখ্যা দ্রুত কমেছে। এখন মাত্র দুই-চারটি পরিবার এই পেশা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। বাকিরা বাধ্য হয়ে জীবিকার তাগিদে অন্য পেশায় চলে গেছেন। কেউ দিনমজুর, কেউ ক্ষুদ্র ব্যবসা, আবার কেউ কৃষিকাজে নিয়োজিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: জাকের পার্টির উদ্যোগে দেশজুড়ে ইফতার মাহফিল
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একসময় বাপ-দাদার সঙ্গে মুড়ি ভাজার কাজ করতেন তারা। সেসময় হাতে ভাজা মুড়ির এতটাই চাহিদা ছিল যে, দিন-রাত পরিশ্রম করেও অর্ডার শেষ করা যেত না। কিন্তু এখন মেশিনে তৈরি মুড়ি সহজলভ্য হওয়ায় হাতে ভাজার মুড়ির কদর কমে গেছে। ফলে আগের মতো কেউ এই কাজে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
বকুলবাড়িয়া কলেজের প্রভাষক মু. জাহিদুল ইসলাম মিন্টু মনে করেন, এই ঐতিহ্যবাহী শিল্প রক্ষায় সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন। যদি এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে কারিগররা আবারও ফিরে আসতে পারেন তাদের পুরোনো পেশায়, আর সংরক্ষিত থাকবে বাংলার এক অনন্য ঐতিহ্য।